শীতঘুম
********
যাত্রাপথে দেখা একদা বর্ণময় সর্ষেক্ষেত
ফেরার পথে প্রতিদিন আরও দূরে সরে যায়।
গুমটি চায়ের দোকান তেরোটা বছর পেরিয়ে
একদিন মিশে যায় পাকা বাড়ির দলে,
এক বর্ণময় সকালের হলুদ রঙের রেশ
দু’চোখের তারায় হলদে রঙেই ঠিকানা খুঁজে পায়।
এভাবেই,
চাষজমি বাসভূমি হয়
হিসিহিসিয়ে ওঠা অবিশ্বাস কন্ঠরোধ করে বিশ্বাসের,
শক্ত গাঁথনির মাঝেও প্রশস্ত হয় বটের শিকড়।
কিছু নিভৃতে দেখা
মুখর হয়ে ওঠে আনমনে।
ট্রেনের জানালায় ভবঘুরে
স্টেশনে বসা অন্য ভবঘুরের দিকে তাকিয়েই থাকে।
চলে যাক ট্রেনে চেপে, বা আটকে থাকুক স্টেশনেই
ভবঘুরেকে কি ঘরে বাঁধা যায়!
ঘরে ফেরা – না ফেরার পরিচিত দ্বিধায় মত্ত
ক্লান্ত একজোড়া পা
ঠিক খুঁজে নেয় চেনা কাঠের দরজা।
জোয়ারের অমোঘ টান আর
পাড়ে বাঁধা দড়ির অবিচল অনুশাসনে
জীর্ণ পানসি প্রতিদিন দীর্ন হয়।
স্বপ্নের শেষ প্রহর জুড়ে ছুটে বেড়ানো এক অবোধের খিলখিল হাসি,
ঘুমভাঙার ভোরে হিমশীতল উপহাস রেখে যায়।
তেরো বছরের শীতঘুম ভাঙার পর কেউ কেউ বোঝে,
কিছু স্বপ্নকে দুঃস্বপ্ন বলতে হয়।
দেবাঞ্জন বাগচী
Leave a Reply